পৃষ্ঠাসমূহ

রবিবার, ১ জুন, ২০১৪

নির্ঘুম রাতের কিছু কথা



বাড়ির প্রতি একটা আলাদা মায়া তৈরি হয়ে যায়। বাড়িতে বেশি বেশি যেতে চাইনা এজন্য। তাঁদেরকে একসাথে পাবো না জানি। মা বাবা তাঁদের চাকরি নিয়ে বেস্ত থাকে। কিন্তু এবার মা বাবার স্কুল ছুটি ছিল, তাই আমি তাঁদের মাঝে আলাদা একটা প্রাণ খুঁজে পেলাম। অন্য এক ভুবন, যেইটা বারবার চোখের সামনে ভেসে আসে। আপনি মনে করতে চাইবেন না, আপনার অবচেতন মন আপনাকে মনে করিয়ে দিবে। খুব বেশি সময় থাকলে এরকম কষ্ট থাকে না। কিন্তু ছিলাম মাত্র একদিন, তাই কষ্ট টা একটু বেশি। মায়ের আদর আর বাবার শাসন তাও মধুর ছিল। আর ছোট ভাইটার সাথে একটু খুনসুটি। অনেক মজার, ছোট ভাইয়েরও স্কুল বন্ধ। 

গ্রীষ্মকালীন অবকাশ, এরকম সময় আর কবে পাবো। আমি প্রথম বাড়ির বাইরে আসি কলেজে ভর্তি হবার পর। তখন থেকে আমার এরকম সমস্যা। বুকের বেথা টা এজন্য আরও বেড়ে আছে। কিছুতেই কাটানো যাচ্ছে না অবচেতন মনের গহীনে মিশে থাকা ভালোবাসার পরশ। অবচেতন মনকে আর কিছু বোঝানো না,মা বলে চাকরি করার কি দরকার, পড়াশোনা কর ঠিক করে আর ভালো গ্রেড পেতে। কিন্ত আমার তো কিছু করতে হবে। তাই কিছু করার চেষ্টা করি। বাবার কথা রেসালট যাতে ঠিক থাকে। আর ছোট ভাই গেমসের পাগলা, মোবাইল আর কম্পিউটার পাইলে সে বসে যায় গেমস খেলতে। তার মাঝে এক উদ্ভাবনী ক্ষমতা আছে যা দেখে আমি নিজেই পুলকিত। তার কথা একটা কম্পিউটার লাগবে, আর আমি কবে আর বাড়ি যাবো। বাবা বলে আর একদিন থেকে যা, মা ও বলে কালকে জাইস, আজকে থাক। কিন্তু আমিতো ক্লাস মিস করব না, আবার এক্সাম ছিল। তারপরে অফিস, অফিস না গেলেও হয়। কিন্তু মাথায় ছিল মা বাবাকে নিয়ে কবে একসাথে থাকতে পারব। বাড়িতে যাবার কথা হলে আমার ভয় লাগে এজন্য। আমার মনের মাঝে অদ্ভুত একটা চেতনা কাজ করে, নিজেকে হারিয়ে ফেলি, কি করব না করব কিছু ভেবে পাই না। 

বাড়ি থেকে আসার পর মনে হয় আবার বাড়ি যাই। আর কিছুদিন থেকে আসি। কিন্তু তাও সম্ভব না। কাজ আছে, ক্লাস আছে, নিজেকে কত করে বুজালাম...... কিন্তু কিছুতেই কিছু হয় না। সব কাজের মাঝে আমি অন্যমনস্ক হয়ে যাই। তাঁদের কি করে বোজাবো, কি করব তখন নিজেও ভেবে পাই না। মার স্কুল শুরু হয়ে গেলে মাও আর সময় পায় না। বাবাও না। তাই একটু সময় পেয়ে তাঁদের কাছে যেতে ইচ্ছা করে। আমার সময় হলে তাঁদের সময় হয় না। তাঁদের সময় হলে আমি বন্ধ পাই না। আমার যখন ভার্সিটি বন্ধ থাকে তখন তাঁদের স্কুল খোলা, আর যখন তাঁদের স্কুল বন্ধ তখন আমার সময় হয় না, কারণ ভার্সিটি আছে। কি এক অদ্ভুত মিল...? তখন খুব রাগ হয়। আবার মাঝে মাঝে বলি আব্বু আম্মু দুজন ক্যান চাকরি করে, একজন করলেই তো হয়। কিন্তু তাও সম্ভব নয়। তাঁদের কে কাছে পাই না আমি ছোট বেলা থেকে। স্কুল থেকে ফেরার পর তাঁদেরকে পেতাম। তাই আমার আক্ষেপটা একটু বেশী, ক্যান হল, না হলে কি নয়...?? আমার আমিকে প্রশ্ন করা, আর উত্তর খুঁজে বেড়ানো। মানুষ তো, আমিও মানুষ। তাই কারো মা বাবার কথা একটু শুনলেই কি জানি মনে হয়। আমার এইটা একটা বিশাল সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে, কারো জন্য ভালো কিছু  করা হয় না। আমি কি করব...?? সবার মত আমি মনের কথা গুলো সহজে বলতে পারি না, আসে না আমার, কিন্তু ভিতর যতক্ষণ থাকবে ততক্ষণ একটা চাপা কষ্ট মনে মাঝে বয়ে বেড়াবে। চাপা কষ্টের জন্য বুকের ভিতর খুব চাপ দে। ভালোবাসার মানুষ গুলো যদি তাও না বোঝে আমি কি বলে বোঝাব? আমার কাছে কোন ভাষা নাই বলার বা বোঝাবার। নিরব মানুষ গুলো সবার অগোচরে চলতে পছন্দ করে এজন্য। একা একা যার পথচলা সে সবার সাথে কেমনে চলবে?? ফাউল ছেলেদের ফাউল কাজ... নিজেকে নিজেই গালাগাল দেই অনেক সময়। 

তুই এমন ক্যান রে...??
কেমন...??
পুরাই ফাউল। কোন কাজের না, কিছু করতে পারিস না ঠিক করে,কারো সাথে ঠিক করে চলতে পারিস না কিছু না। এরকম মানুষ হয় নাকি...............??
উত্তর গুলো আজো অজানা,অচেনা। অচেনা মানুষ হয়ে থেকে গেলাম।
  

1 টি মন্তব্য:

  1. ফাউল ছেলেদের ফাউল কাজ...!! এভাবে নিজেকে আন্ডার-ষ্টিমেট করলে সৃষ্টিশীলতার প্রতিধ্বনি বিনষ্ট হবে ।

    উত্তরমুছুন