পৃষ্ঠাসমূহ

বুধবার, ২১ নভেম্বর, ২০১২

মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় ঘড়ি নিষিদ্ধ



 
নুরুল ইসলাম হাসিব
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

ঢাকা, নভেম্বর ২১ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজ ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষার্থীরা কেন্দ্রে ঘড়ি নিতে পারবেন না।

সম্প্রতি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় ঘড়ি সদৃশ মোবাইল ফোনে কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীর কাছে এসএমএসের মাধ্যমে উত্তর যাওয়ার ঘটনা ধরা পড়ার পর এ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়।

শুক্রবার মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (চিকিৎসা শিক্ষা) শাহ আব্দুল লতিফ বুধবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তীব্র প্রতিযোগিতামূলক এই পরীক্ষায় সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা নিশ্চিতে প্রথমবারের মতো তারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

এই সিদ্ধান্তের কারণে পরীক্ষার্থীরা যাতে কোনো সমস্যার মুখোমুখি না হন সেজন্য পরীক্ষা কেন্দ্রের প্রতিটি কক্ষে ‘পর্যাপ্ত সংখ্যক ঘড়ি’ বসানোর জন্য কেন্দ্র প্রধানদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

দেশের সব সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে এবার আট হাজার ৪৯৩টি আসনের বিপরীতে ৫৮ হাজার ৭২৩ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন।

২২টি সরকারি মেডকেল কলেজে দুই হাজার ৮১১ এবং ৫৩টি বেসরকারি মেডিকেলে চার হাজার ২৪৫টি আসন রয়েছে। এ ছাড়া নয়টি সরকারি ডেন্টাল কলেজ ও মেডিকেল কলেজ ডেন্টাল ইউনিটে ৫৬৭টি আসন রয়েছে। আর ১৪টি বেসরকারি ডেন্টাল ইনস্টিটিউটে রয়েছে ৮৭০টি আসন।

পরীক্ষা কেন্দ্রে মোবাইল ফোন নেয়ার ওপর অনেক আগেই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। আর এবার ঘড়ির বিষয়েও একই সিদ্ধান্ত নেয়া হল।

শাহ আব্দুল লতিফ বলেন, সম্প্রতি ঘড়ি ব্যবহার করে পরীক্ষায় জালিয়াতির যে খবর বেরিয়েছে তার পরিপ্রেক্ষিতে রোববার তাদের বৈঠকে কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীদের ঘড়ি নেয়াও নিষিদ্ধ করা হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়েসহ বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষায় ঘড়ি ব্যবহার করে জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত অভিযোগে অক্টোবরে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ।

এই জালিয়াত চক্রের সদস্যরা শিক্ষার্থীর কাছ থেকে বিপুল অঙ্কের টাকা নিয়ে তাদের ঘড়ি সদৃশ মোবাইল ফোন সরবরাহ করতেন এবং পরীক্ষা চলাকালে কেন্দ্রে ওই মোবাইলে এসএমএস পাঠিয়ে প্রশ্নের উত্তর জানিয়ে দিতো।

পরিচালক বলেন, শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত দেশের ২৩টি পরীক্ষা কেন্দ্রে এক ঘণ্টার এমসিকিউ পরীক্ষা হবে। প্রতিটি কেন্দ্রে এই পরীক্ষা তদারকির জন্য উচ্চ পর্যায়ের কমিটি করা হয়েছে।

ওই সব কমিটিতে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, সিনিয়র সচিব, অতিরিক্ত সচিব, যুগ্ম সচিব এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অনেক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা রয়েছেন।

‘প্রশ্নফাঁসের কোনো গুজব ওঠাসহ’ যে কোনো অনাকাক্সিক্ষত ঘটনার জন্য দায়ীদের গ্রেপ্তারে র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখা হচ্ছে বলেও জানান পরিচালক।

গত ১০ সেপ্টেম্বর আদালতের এক আদেশে পরীক্ষার মাধ্যমে মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে শিক্ষার্থীর ভর্তির নির্দেশনার পর ২৩ নভেম্বর পরীক্ষার দিন রাখে সরকার।

এর আগে গত ১২ অগাস্ট স্বাস্থ্যমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হক বলেছিলেন, এবার থেকে কোনো ভর্তি পরীক্ষা নয়, এসএসসি ও এইচএসসির জিপিএ’র ভিত্তিতে মেডিকেল ও ডেন্টালে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে।

মন্ত্রীর ওই ঘোষণার পরপর তার বিরুদ্ধে সারা দেশে আন্দোলন শুরু করে মেডিকেল ভর্তিচ্ছুরা। আন্দোলনের মুখে সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে সরকার।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এনআইএইচ/এএইচ/এএল/১৭২২ ঘ.

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন